নবজাতকের শ্বাসকষ্ট নিম্নোক্ত তিন লক্ষণের যে কোনোটা এক বা একাধিক চিহ্ন নিয়ে প্রকাশ পায়। যেমন-
১) প্রতি মিনিটে শ্বাস এর হার ৬০ বা তার বেশি।
২) বুকের নিচের অংশ গভীরভাবে দেবে যাওয়া ।
৩) গ্রান্টিং- শ্বাসপ্রশ্বাসে কষ্টকর শব্দ।
নবজাতকের ৫-১০ শতাংশ ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। তার কারণাদি নবজাতকের বয়স, গর্ভকাল ও মায়ের স্বাস্থ্য ঝুঁকির ওপর নির্ভরশীল থাকে।
প্রধান কারণ-
১) শ্বাসতন্ত্রের অসুখ : আরডিএস, টিটিএন, গর্ভকালীন নিউমোনিয়া, মিকোনিয়াম এসপিরেশন সিনড্রোম, নিউমোনিয়া, এসপিরেশন নিউমোনিয়া, সার্জিক্যাল কারণ।
২)হার্ট ফেলিওর ।
৩)কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের অসুখ : ভূমিষ্ঠকালীন শ্বাসরোধ জটিলতা, মস্তিষ্কের অভ্যন্তরে রক্তপাত।
৪)মেটাবলিক, রক্তে গ্লুকোজ মাত্রা নেমে গেলে, রক্তে অম্লতা।
৫)অন্যান্য : অত্যধিক শীতলতা, রক্তে বেশি মাত্রার হিমোগ্লোবিন প্রভৃতি।
ব্যবস্থাপনা-
– তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ প্রয়োজনে রেডিয়েন্ট ওয়ার্মার এর ব্যবহার।
– শিরায় স্যালাইন, যদি বুকের দুধ চুষে খেতে না পারে।
-অক্সিজেন ৮৮-৯৫ শতাংশে বজায় রাখা।
-প্রয়োজনে সিপেপ, মেকানিকেল ভেনটিলেশন।
-সারফেকটেন্ট থেরাপি (উপসর্গ দেখা দেয়ার ২ ঘণ্টার মধ্যে)।
– আরডিএস প্রতিরোধে গর্ভবতী মাকে ২৪ ও ৩৪ সপ্তাহের মধ্যে স্টেরয়েড প্রদান।

শিশুর মলে রক্ত দেখা গেলে-
শিশুর নানা আন্ত্রিক রোগে মলে রক্ত দেখা যায়। আন্ত্রিক রক্তপাত নালির উপরের অংশে বা নিচের অংশ যে কোনোটা থেকে হতে পারে। কালো পায়খানা, দেখতে তারপিন এর মতো (মেলেনা) দেখা গেলে তা- পাকস্থলিতে অল্প পরিমাণ (৫০-১০০ মিলি) রক্তপাতের ফলে হতে পারে, যা ৩-৫ দিন স্থায়ী হয়।
-অন্ত্রনালীর রক্তপাতের জন্য যথাযথ রোগ ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা সম্পন্ন করা হয়, সঙ্গে সঙ্গে ইমার্জেন্সি ব্যবস্থাও গ্রহণ করা উচিত।
– যেসব দ্রব্য বা খাবার লাল রঙের যেমন জেলি, টমেটো বা স্টবেরি, তা শিশুর বমিতে বা মলে রক্তরঙ নিয়ে আসতে পারে, তাই মেলেনাতে মলের ‘ওবিটি ল্যাব পরীক্ষা’ করিয়ে সুনিশ্চিত হতে হয়।
– শিশুর নাক থেকে রক্তপাত, নবজাতক বয়সে জরায়ুতে থাকাকালীন সময়ে রক্ত গিলে ফেলা, কফ কাশিতে রক্ত, মুখগহ্বরের রক্তপাত গিলে ফেলার কারণে আন্ত্রিক নালি হতে রক্তপাত বলে ভ্রম হতে পারে। সেজন্য দ্রুততার সঙ্গে নাক, গলা ও মুখগহ্বর পরীক্ষা করার প্রয়োজন রয়েছে।
যেসব সচরাচর কারণে শিশু বয়সে আন্ত্রিক রক্তপাত হয় সেসব হল-
১)মলদ্বারের ফিসারস ।
২) ইন্টা-সাসেপশামস-টেলিস্কোপের মতো অন্ত্রনালির এক অংশ নিচের অংশে ঢুকে যাওয়া ।
৩) অ্যামিবা পরজীবী সংক্রমণ।
৪) মিকেলস ডাইভারটিকুলাম ।
৫) কোলনের পলিপ।
৬)আন্ত্রিক প্রদাহ রোগ (আইবিডি) ।
৭) পায়ুমুখের আলসার।
অসচরাচর কারণাদি হল:
-পাইলস্ (হিমোরইডস)।
– রক্তনালির স্থানিক টিউমার ইত্যাদি।
ব্যবস্থাপনা: সিবিসি, মল পরীক্ষা, আলসনোগ্রাফি, প্রয়োজনমাফিক প্রকটোসিগময়ডোসকোপি ও অন্যান্য ল্যাব পরীক্ষা- সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে চিকিৎসা।
শিশুর স্ট্রোক
প্রতি লাখে প্রায় ৩-৮ জন শিশু স্ট্রোকে পতিত হয়। যার মধ্যে নবজাতক শিশুও উল্লেখযোগ্য হারে থাকে। এর আধিক্য দেখা যায় ছেলে সন্তানে।
স্ট্রোক কি : সংজ্ঞা অনুযায়ী ব্রেইন এর কার্যক্রম যদি স্থানিক বা সামগ্রিকভাবে ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে অকেজো থাকে, যা থেকে কখনও কখনও মৃত্যুও ঘটে তবে তা স্ট্রোক বলে অভিহিত হয়।
কারণ ও ধরন : শিশু বয়সে মূলত: দুই ধরনের স্ট্রোক হয়ে থাকে যার পার্থক্য নির্ণয় চিকিৎসার প্রয়োজনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ব্রেইনে রক্ত সঞ্চালন রুদ্ধ হলে : ইসকেমিক্ স্ট্রোক (শিশু বয়সে দু-তৃতীয়াংশ স্ট্রোক হয় এসব কারণে, এতে রক্ত সঞ্চালন পথরুদ্ধ থাকার ফলে মস্তিষ্ক কোষ যথাযথভাবে রক্ত সঞ্চালন থেকে বঞ্চিত থাকে)-
১) হার্টের অসুখ- জন্মগত হৃদত্রুটি, বাতজ্বরজনিত হার্টের অসুখ, কার্ডিয়াক সার্জারি পরবর্তী জটিলতা।
২)রক্ত রোগ- সিকেল সেল অ্যানিমিয়া, ব্লাড ক্যান্সার, পলিসাইথেমিয়া।
৩) নানা সংক্রমণ- ব্যাকটেরিয়া, যক্ষ্মা, এইডসজনিত মস্তিষ্কের সংক্রমণ।
৪) অন্যান্য- রক্ত চাপ কমে গেলে, আয়রণ ঘাটতিজনিত রক্তস্বল্পতা, এসএলই, মোয়া মোয়া রোগ।
হেমোরেজিক : মস্তিষ্কের কোনো রক্ত নালি ফেটে গিয়ে-
১) ব্রেইনের রক্ত নালির জন্মত্রুটি বা টিউমার।
২) রক্তরোগ – লিউকেমিয়া, ডিআইসি।
৩) মাথায় আঘাত – পড়ে গিয়ে, বা ছোট বাচ্চাকে জোরে টানাটানি- ধাক্কা দেয়া, জন্মকালীন সময়ে মাথায় আঘাত।
অসুখের লক্ষণ : বয়স, ব্যাপকতা ও ধরনের ওপর নির্ভর করে রোগ লক্ষণাদির পরিবর্তন হয়।
১) বেশি বয়সের শিশু বড়দের মতো শরীরের একদিকের প্যারালাইসিস, বাকরুদ্ধ ও ব্রেইনের কোন অংশে আঘাত সে অনুযায়ী চিহ্ন নিয়ে আসে
২) প্রিস্কুল বয়সী শিশুতে আঘাতজনিত দুর্ঘটনা ও মস্তিষ্কে ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণ। মেনিজাইটিস যুক্ত থাকে বেশি ।
৩) কিছু কিছু উপসর্গ শিশুর সুনির্দিষ্ট কারণের ওপর নির্ভর করে।
ল্যাব পরীক্ষা
- নিউরো-ইমেজিং : এমআরআই (ব্যয়বহুল, তবে এটাই স্বীকৃত প্রথম পরীক্ষা,) সিটি স্ক্যান।
- হার্টের অসুখের নানা পরীক্ষা : বুকের এক্সরে, ইসিজি, ইকোকার্ডিয়োগ্রাম।
- সি.এস.এফ পরীক্ষা প্রভৃতি।
চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা-
– মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণে নিউরো সার্জারির মতামত গ্রহণযোগ্য।
-ইসকেমিক স্ট্রোকে টিপিএ ও অন্যান্য ওষুধ।
– শিশুর খাবার, কথা বলার জন্য বিশেষ থেরাপি।
-বুকে কোনো ঘা থাকলে তার যথাযথ চিকিৎসা।
– ইসকেমিক স্ট্রোকে প্রায় ২০ শতাংশ শিশু মারা যায়।
-স্ট্রোকে পতিত শিশুদের প্রায় ৬০ শতাংশে নানা রকমের স্নায়ুবিক জটিলতা দেখা যায়।
শিশুর বদহজম রোগ-
শিশুর খাবার যদি যথাযথভাবে পাচ্যনালিতে শোষিত না হয়, তবে সে অপুষ্টি সংকটে পড়ে। ৫ বছরের কম বয়সী শিশু প্রধানত এর শিকার।

শিশু বয়সে বদহজমের সচরাচর কারণ-
- গরুর দুধের অ্যালার্জি।
- কৃমি সংক্রমণ বিশেষত: জিয়ারডিয়া, ক্রিপটো স্পোরিডিয়াম।
- সিলিয়াক ডিজিজ- যা গম, বার্লি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্য।
হজমের নানা এনজাইম যা অগ্ন্যাশয়, পিত্তথলি হতে নিঃসৃত হয় তার অভাব।
রোগ লক্ষণাদি-
- দীর্ঘমেয়াদি ডায়রিয়া।
- উচ্চতায় না বাড়া।
- রক্তস্বল্পতা।
- রিকেটস্।
শর্করা জাতীয় খাবারে বদহজম-
- শিশুর মলের পরিমাণ বেশি থাকে, পেট ফাঁপা থাকে ও পায়ুপথে বেশি বাতাস বের হয়।
- আমিষ জাতীয় খাবারে হজমে গোলমাল হলে শিশুর মল দুর্গন্ধযুক্ত হয় ও তার শরীরে ফোলা বা পানি জমে।
- ফ্যাট বা চর্বি জাতীয় খাবার শোষণে সমস্যা থাকলে সে ‘এ ভিটামিন’সহ নানা ভিটামিনের অভাবে ভোগে।
- নানা ভিটামিনস্ (খাদ্যপ্রাণ) ও মিনারেলস্ (খনিজ পদার্থ) এর অভাবজনিত রোগ চিহ্ন যেমন: রক্ত শূন্যতা, রক্তাভ জিভ, মুখের কোনায় ঘা ইত্যাদি দেখা যায়।
চিকিৎসা ব্যবস্থাপনা
- পরপর তিন দিন মল পরীক্ষায় রোগের কারণের অনেক তথ্য পাওয়া যায়।
- কারণ ভেদে সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা।
- গাভীর দুধের অ্যালার্জিতে- গাভীর দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার যেমন বিস্কুট, ঘি, মাখন ইত্যাদি খাবার খেতে না দেয়া, এমনকি তা অল্প পরিমাণেও না। এ ধরনের বদহজম রোগ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিন বছর বয়সের মধ্যে লোপ পায়।
- সিলিয়াক ডিজিজ নির্ণয় করা গেলে- যা নির্ণয়ে কখনওবা অনুমানের সঙ্গে আন্ত্রিক বায়োপসি করতে হয়, গ্লুটেনযুক্ত খাবার শিশুর খাদ্য তালিকা হতে বাদ দিতে হবে।
- কৃমি সংক্রমের সঠিক চিকিৎসা।
- শিশুর পুষ্টিমান সুরক্ষা- ক্যালসিয়াম, থাইয়ামিন, খনিজ, মাল্টিভিটামিন, ফসফেট, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম প্রভৃতির জোগান।

শিশুর লিঙ্গ যদি ক্ষুদ্রাকৃতির হয়- মেডিক্যাল পরিভাষায় বলা হয় ‘মাইক্রোপেনিস’। ডাক্তারি পরীক্ষায় লিঙ্গ-ই, তবে এতো ছোট যে অন্তকোষ না থাকলে- তা কন্যা শিশুর ক্লাইটোরিস (ভগাঙ্গুর) বলে ভ্রম হতে পারে।
- লিঙ্গ এটা নিশ্চিত হওয়ার পর, তার দৈর্ঘ্য যদি দৈর্ঘ্য রেখার ২.৫ এসডির নিচে অবস্থান নেয়, তবে তা ক্ষুদ্রাকৃতির লিঙ্গ বলে বিবেচিত হয়। তবে এক্ষেত্রে এ দৈর্ঘ্য নির্ণয় ও তা চার্টে ফেলে খতিয়ে দেখাটা বেশ দক্ষতার বিষয়।
- লিঙ্গ দৈর্ঘ্য মাপার সময় লিঙ্গ সোজাভাবে টান রেখে গোড়া থেকে লিঙ্গমুখ পর্যন্ত স্কেলে মাপা হয়। গর্ভকাল পাওয়া নবজাতকে লিঙ্গের দৈর্ঘ্য ৩.৫, ০.৭ সে. মি. এবং তার বেড় ১.১ ০.২ সে. মি.। সাধারণভাবে যদি দৈর্ঘ্য ১.৯ সে.মি. এর কম হয়, তবে তা ক্ষুদ্রাকৃতির লিঙ্গ বলে ধরে নেয়া হয়। শিশুর ক্ষুদ্রাকৃতি লিঙ্গের পেছনে বেশ কিছু কারণ আছে। হরমোনজনিত ও অজানা কারণ।
- এর কারণ জানতে মাথার এমআরআই- যাতে করে মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস ও এনটেরিয়র পিটুইটারি অন্তঃক্ষরণ গ্রন্থিদ্বয়ের এনাটামি বিচ্যুতি শনাক্ত করা যায়। কেরিও টাইপিং করে শিশুর জেনেটিক ত্রুটি বের করে আনতে হয় কখনোবা।Healthx BD
আরোও জানুন-
–রোগ প্রতিরোধের ক্ষেত্রে ভিটামিন-ই খাবারের গুরুত্ব


2 Comments
Alright, so OKVIP78win isn’t bad. It’s got a pretty standard casino layout, but some of the games are a bit more unique. Not a huge fan of the color scheme, but that’s just me. Check it out for yourself okvip78win.
Gameteenpattigold is fun to play. The gold makes it feel more legit haha. Take a look gameteenpattigold.