হার্ট আমাদের দেহের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এটি রক্ত সঞ্চালন করে শরীরের সকল অংশে পুষ্টি ও অক্সিজেন পৌঁছানোর কাজ করে। কিন্তু কখনো কখনো হার্টের মাংসপেশির অসুখ দেখা দিতে পারে, যার নাম “কার্ডিওমায়োপ্যাথি”।
কার্ডিওমায়োপ্যাথি – কার্ডিওমায়োপ্যাথি হলো এমন একটি রোগ যেখানে হার্টের মাংসপেশির সংকুচিত হওয়া বা এর কার্যক্ষমতা হ্রাস পায়। এর ফলে হার্ট সঠিকভাবে রক্ত পাম্প করতে পারে না, যা শরীরে রক্তের পরিমাণ কমিয়ে দেয় এবং বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ সৃষ্টি করে।
কার্ডিওমায়োপ্যাথি প্রধানত তিন ধরনের হয়ে থাকে:
1. ডিলেটেড কার্ডিওমায়োপ্যাথি (DCM): এই প্রকারের কার্ডিওমায়োপ্যাথিতে হার্টের পাম্পিং ক্ষমতা কমে যায় এবং হার্টের পেশি প্রসারিত হয়ে যায়। এর ফলে হার্টের আকার বড় হয়ে যায় এবং রক্ত সঞ্চালনের সমস্যা হয়।
2.হাইপারট্রফিক কার্ডিওমায়োপ্যাথি (HCM):এই প্রকারের রোগে হার্টের মাংসপেশির মোটা হয়ে যায়, যা হার্টের কাজ করতে সমস্যা সৃষ্টি করে। এটি সাধারণত জেনেটিক কারণে ঘটে।
3. রেস্ট্রিকটিভ কার্ডিওমায়োপ্যাথি (RCM): এই ধরনের কার্ডিওমায়োপ্যাথিতে হার্টের পেশি শক্ত হয়ে যায় এবং হার্টের কক্ষগুলো সঠিকভাবে প্রসারিত হতে পারে না।
কার্ডিওমায়োপ্যাথির লক্ষণসমূহ-
- শ্বাসকষ্ট: সাধারণ কাজকর্ম করতে গিয়ে শ্বাসকষ্ট অনুভব হতে পারে।
- থাকনা বা পিপঁড়ে পিপঁড়ে অনুভূতি:সাধারণ কার্যকলাপেও ক্লান্তি অনুভব হতে পারে।
- পেশীতে ব্যথা বা অস্বস্তি: বিশেষ করে বুকের মধ্যে ব্যথা অনুভূত হতে পারে।
- অস্বাভাবিক হৃদস্পন্দন: হার্টের স্পন্দন খুব দ্রুত বা অস্বাভাবিক হতে পারে।
কার্ডিওমায়োপ্যাথির কারণ–
- জেনেটিকস:অনেক ক্ষেত্রে এই রোগ পরিবারের মধ্যে বংশানুক্রমে চলে আসে।
- সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা: উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ইত্যাদি কিছু স্বাস্থ্য সমস্যাও এই রোগের কারণ হতে পারে।
- সংক্রামক রোগ: কিছু ভাইরাসের সংক্রমণ হার্টের মাংসপেশিতে ক্ষতি করতে পারে।
প্রতিরোধ এবং চিকিৎসা-
কার্ডিওমায়োপ্যাথি নির্ণয় করার জন্য সাধারণত ইকোকার্ডিওগ্রাম, ইসিজি, এবং হার্টের অন্যান্য পরীক্ষা করা হয়। চিকিৎসার ক্ষেত্রে রোগীর অবস্থার ওপর নির্ভর করে চিকিৎসক বিভিন্ন চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারেন। সাধারণ চিকিৎসার মধ্যে থাকে:
- ওষুধ: হার্টের কার্যক্ষমতা উন্নত করতে বা লক্ষণ কমাতে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ ব্যবহার করা হয়।
- লাইফস্টাইল পরিবর্তন: স্বাস্থ্যকর খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম, এবং স্ট্রেস কমানো উপকারী হতে পারে।
- সার্জারি:কিছু ক্ষেত্রে হার্টের অপারেশন বা অন্য ধরনের চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে।
কার্ডিওমায়োপ্যাথি একটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা হলেও এটি সঠিক চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসরণ করে এই রোগের প্রভাব কমানো সম্ভব।Healthx BD
আরও জানুন-
–পায়ের গোড়ালি ব্যথার কারণ ও চিকিৎসা