ত্বকের সুস্থতা শুধু ত্বকের যত্নে নয় প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসের ওপরও নির্ভর করে। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে বাড়িয়ে তোলা ছাড়াও ত্বককে পুনরুজ্জীবিত করে। কিছু খাবার এতোটাই স্বাস্থ্যকর যা ত্বকের স্বাস্থ্যের ওপর সরাসরি প্রভাব ফেলে। এসব খাবার বলিরেখা কমিয়ে ত্বক মসৃণ করে। আর শীত মৌসুমে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলাটা বেশি দরকার।কারণ শীতে ত্বক ফ্যাকাশে ও শুষ্ক হয়ে যায়। এমনকি ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারের পরেও শুষ্ক দেখায়।
তবে, এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো ত্বকের শুষ্কতা থেকে দারুণ সমাধান দিতে পারে। টাইমস অব ইন্ডিয়ার নিয়মিত লেখক ফিটনেস এবং পুষ্টিবিদ ভিপি রোহিত শেলাটকর শীতে ত্বক সুস্থ রাখার সুপারফুডের একটি তালিকা দিয়েছেন। যেগুলো শীতের সব ধরণের সমস্যা থেকে ত্বককে রক্ষা করে।
পানি
আমাদের প্রতিদিনের খাবারের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উপাদান পানি। পানি আমাদের শরীর এবং ত্বকে হাইড্রেশনের প্রধান উৎস। পর্যাপ্ত পানি পান করলে ত্বক নরম, মসৃণ এবং কোমল থাকে। কিন্তু, পর্যাপ্ত পানি পানের অভাবে ত্বকে শুষ্কতা, বলিরেখা এবং দাগের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এমনকি কম পানি পান শরীর ও ত্বককে ডিহাইড্রেটেড করে তোলে। যার ফলে ক্লান্তি বাড়ে এবং যে কাউকে বয়স্ক দেখাতে পারে।
গাজর
গাজর বিটা-ক্যারোটিন এবং লাইকোপেন সমৃদ্ধ। যা ত্বককে ইউভি রশ্মির ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। যদিও শীতকালে সূর্যের আলো খুব প্রখর থাকে না। তবুও আমাদের চারপাশে ইউভি রশ্মির বিভিন্ন উৎস থাকে। গাজরের ভিটামিন এ, পটাসিয়াম এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শুষ্ক ত্বক এবং অমসৃণ ত্বকের টোন সমস্যা দূর করে।
সাইট্রাস ফল
শীতকালে প্রচুর পরিমাণে তাজা রসালো এবং সতেজ সাইট্রাস ফল যেমন- কমলা, মাল্টা, আঙ্গুর পাওয়া যায়। ভিটামিন সি সমৃদ্ধ এসব ফল শীতের জন্য সুপারফুড হতে পারে। এগুলোর কিছু সাধারণ সুবিধা হলো- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং এর ফাইবার হজম শক্তি বৃদ্ধি করে।
ত্বক ফর্সা রাখার কিছু উপায়
সূর্যের তাপ থেকে দূরে থাকা
সূর্যের তাপ থেকে সব সময় নিজের ত্বককে রক্ষা করুন। সূর্যের তাপ সরাসরি ত্বকের উপর পড়লে ত্বকের রঙ ধীরে ধীরে কালচে হতে শুরু করে। কিন্তু আমরা যতই বলি সূর্যের আলোকে এড়িয়ে চলতে, ব্যস্ততাপূর্ণ এই জীবনে আসলেই কি তা সম্ভব? না। নিত্যদিনের কাজে আমাদের বের হতেই হবে । এজন্য রোদে বের হবার আগে ভালো ব্র্যাণ্ডের সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন যা আপনার ত্বকের সুরক্ষায় নিয়োজিত থাকবে।
বাদাম ও হলুদের পেস্ট
সকালে দুধের মধ্যে ৪-৫টি বাদাম, জাফরান মিশিয়ে রাখুন। রাতে হলুদ মিশিয়ে পেস্ট করুন। রাতে এই পেস্ট মুখে ও গলায় লাগিয়ে রাখতে পারেন। সকালে উঠে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। প্রতি ২ সপ্তাহ পর পর এটি করতে পারেন।
দুধ
আমরা প্রায়ই বলি, ‘দুধে আলতা গায়ের রং’। হ্যাঁ। দুধে আলতা গায়ের রঙ সবার কাম্য আর দুধও হতে পারে আপনার ত্বক ফর্সা করার একটি মাধ্যম। দুধ ত্বকের মরা চামড়া দূর করে ত্বকের ঔজ্জ্বল্য ফিরিয়ে আনে। একটি বাটিতে কিছুটা দুধ নিয়ে তার মধ্যে একটি তোয়ালে ভিজিয়ে আপনার মুখে আলতো ভাবে ঘষতে থাকুন। চাইলে আপনি দুধের মধ্যে ২ টেবিল চামচ যবের গুঁড়া, ২ টেবিল চামচ বাদামি চিনি মেশাতে পারেন। এলার্জির সমস্যা থাকলে এই পেস্ট উপযোগী নয়।
লেবু
একটি লেবু কেঁটে দুই ভাগ করুন আর মুখে ঘষতে থাকুন। এভাবে ১০-২০ মিনিট করার পর ধুয়ে ফেলুন। প্রতিদিন এটি করার ফলে আপনার ত্বক অনেকটা ফর্সা থাকবে।
টমেটো
টমেটো আমাদের সবার বাসায়ই থাকে। টমেটো ভিটামিন সি তে সমৃদ্ধ। টমেটো, ২-৩ ফোঁটা লেবুর রস, কয়েক ফোঁটা গোলাপজল মিশিয়ে পেস্ট করে মুখে ও গলায় লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রাখুন। প্রতি সপ্তাহে এটি করতে পারেন।
প্রকৃতিতে আবহাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে আমাদের খাদ্যাভ্যাসেও কিছু পরিবর্তন দরকারি। শীতের সময় শুষ্ক ত্বক এবং চুল পড়াও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তাই এসময়ে পুষ্টি সমৃদ্ধ খাবার খেয়ে এসব সমস্যা মোকাবিলা করতে হবে।