ধনেপাতার অসংখ্য স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে। এটি হৃদ্রোগের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে, ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং প্রদাহ হ্রাস করে। ধনেপাতায় থাকা এসেনশিয়াল অয়েল এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কোষের ক্ষতি প্রতিরোধ করে। গবেষণায় দেখা গেছে, এটি মৃগী রোগের খিঁচুনি ও উদ্বেগ কমাতে সক্ষম। এছাড়া, ধনেপাতায় রয়েছে কার্বোহাইড্রেট, প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি২ এবং অন্যান্য ভিটামিন।
১. প্রদাহ রোধ করে
ধনেপাতা রান্নার পাশাপাশি বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি হিসেবেও ব্যবহৃত হয়। এর রসে উপস্থিত এসেনশিয়াল লিপিড ও লিনালুল তেল রয়েছে, যা গবেষণায় দেখা গেছে যে ব্যথা উপশম করতে পারে এবং অতিরিক্ত সক্রিয় স্নায়ুতন্ত্রকে শান্ত করতে সহায়তা করে। তাছাড়া, ধনেপাতা মৃগী রোগ, বিষণ্নতা এবং প্রদাহ প্রতিরোধে কার্যকর।
২. থাইরয়েডের ভারসাম্য বজায় রাখে
হাইপারথাইরয়েডিজম এবং হাইপোথাইরয়েডিজম—দুটিই থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা। থাইরয়েড গ্রন্থি আমাদের গলার সামনের দিকে অবস্থিত এবং এটি কিছু গুরুত্বপূর্ণ হরমোন নিঃসৃত করে। যখন হরমোনের ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়, তখন এই সমস্যা সৃষ্টি হয়। ধনেপাতা থাইরয়েডের এই ভারসাম্য রক্ষা করতে সাহায্য করে। এছাড়া, ধনেপাতার রস অতিরিক্ত গরম অনুভূতি, হট ফ্ল্যাশ, রাতে ঘামের সমস্যা এবং পিত্তজনিত নানা অসুবিধা কমাতে উপকারী।
৩. খিঁচুনি প্রতিরোধ করে
ধনেপাতা একটি নির্দিষ্ট পটাশিয়াম চ্যানেল, যা কেসিএনকিউ চ্যানেল নামে পরিচিত, সক্রিয় করে। কেসিএনকিউ চ্যানেলটি কার্ডিয়াক এবং নিউরোনাল উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণের মতো বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রমে জড়িত। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ধনেপাতা মৃগীরোগের খিঁচুনি কমাতে সহায়তা করে।
৪. রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস কমায়
ধনেপাতা প্রদাহ হ্রাসকারী এবং ব্যথা উপশমকারী গুণ রয়েছে। এটি রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসের উপসর্গ কমাতে সাহায্য করে। রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস হার্ট, ফুসফুস, ত্বক এবং রক্তনালিকাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার সম্ভাবনা রাখে।
৫. চক্ষূরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়
ধনেপাতায় বিটা-ক্যারোটিন ও লুটিন রয়েছে, যা প্রচুর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ। ফ্রি র্যাডিকেল শরীরের কোষকে ক্ষতি করে, যা ক্যানসার, হৃদ্রোগ এবং অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী রোগের সৃষ্টি করতে পারে। ধনেপাতার অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেল দূর করে কোষকে রক্ষা করে। গবেষণায় দেখা গেছে, ধনেপাতার রসে ধনেবীজের তুলনায় অধিক অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে। নিয়মিত ধনেপাতা খেলে চক্ষুরোগ ও কিছু ক্যানসারের ঝুঁকি কমে।
৬. মন–মেজাজ ভালো রাখে
আমরা অনেক সময় উদ্বেগ কমানোর জন্য ওষুধ গ্রহণ করি, কিন্তু ধনেপাতার রসও উদ্বেগ কমাতে সাহায্য করে। কারণ, এই নির্যাস পেশি শিথিল করে এবং প্রশমিত করে, ফলে মন-মানসিকতা ভালো হয়।
৭. ডায়াবেটিস কমাতে সাহায্য করে
যখন অগ্ন্যাশয় ইনসুলিন তৈরি করতে অক্ষম হয় বা শরীর উৎপাদিত ইনসুলিন ব্যবহার করতে পারেনা, তখন তাকে ডায়াবেটিস বলা হয়। এর ফলে রক্তে শর্করার ভারসাম্য বিঘ্নিত হয়। ন্যাশনাল লাইব্রেরি অব মেডিসিনের তথ্য অনুযায়ী, ধনেপাতার ইনসুলিন প্রতিরোধের ক্ষমতা রয়েছে, অর্থাৎ এটি হাইপারগ্লাইসেমিয়া কমাতে সহায়তা করে।Healthx BD
আরও জানুন-