আপনার আশেপাশে একটু খেয়াল করলে দেখবেন কেউ না কেউ সাইনাসের সমস্যায় ভুগছে।সাইনাসের সমস্যা মূলত নাকের হাড়ের সমস্যার কারণে হয়ে থাকে। নাকের আশেপাশে যে হাড়গুলো আছে তার ভেতরে এক ধরনের গহ্বর রয়েছে, যেগুলো বাতাসে পরিপূর্ণ থাকে। এই গহ্বরগুলোকে সাইনাস বলা হয়ে থাকে।নাকের দুইপাশ থেকে মাথা পর্যন্ত ম্যাক্সিলারি সাইনাস, স্পেনয়েন সাইনাস, ইথময়েড সাইনাস ও ফ্রন্টাল সাইনাস থাকে। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় ম্যাক্সিলারি সাইনাস। সাইনাসের বিভিন্ন কাজ রয়েছে। যেমন-
শ্বাস প্রশ্বাস এর মাধ্যমে আমরা যে বায়ু গ্রহণ করি সেগুলোর আদ্রর্তা ঠিক রাখা সাইনাসের কাজ। মানুষ যখন গরম আবহাওয়াতে থাকে তখন বাতাসকে ঠান্ডা করে আর ঠান্ডা বাতাসকে গরম বাতাসে রুপান্তরিত করে এই সাইনাস। শ্বাস প্রশ্বাসের সময় নানাধরণের ব্যাকটেরিয়া ,ভাইরাস, ধুলাবালি নাকের ভেতর প্রবেশ করলে সাইনাস থেকে এক ধরনের মিউকাস বা শ্লেষ্মা তৈরি হয়, যা ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস প্রতিরোধে সাহায্য করে। এ ছাড়া সাইনাস বাতাসে পূর্ণ থাকার কারণে মাথার ওজন কম মনে হয়। Healthx BD
সাইনুসাইটিস কারণ –
১) সাইনুসাইটিসের প্রধান কারণ হলো অ্যালার্জিক, এটিকে অ্যালার্জিক রাইনাইটিস বলা হয়। শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়ার সময় বাতাসে ধুলাবালির সঙ্গে থাকা বিভিন্ন ব্যাক্টেরিয়া নাকের ভেতর প্রবেশ করে নেজাল মিউকাসে ইরিটেশন তৈরি করে।যার ফলে হাঁচি হয়, ঘন ঘন ঠান্ডা লাগে, সর্দি হয়, নাকে প্রদাহ হয়, যা থেকে সাইনুসাইটিস হইয়ে থাকে।
২) ঠান্ডার কারণেও সাইনুসাইটিসের সমস্যা হতে পারে। শীতের সময়ে স্যাঁতস্যাঁতে ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাসের কারণে হতে পারে।
৩)কারো যদি পলিপ সমস্যা থাকে তবে নাকের মাংসপেশী বেড়ে সাইনুসাইটিস হতে পারে।
৪) নাকের হাড় যদি বেড়ে যায় বা বাঁকা হয়ে যায় তাহলে সাইনুসাইটিসের সমস্যা হতে পারে। অনেকের আবার ছোট থেকেই নাকের হাড় বাঁকা থাকে বা আঘাতের কারণে হয়ে থাকে।
৫) নাকে বাতাসের প্রবাহ যদি ঠিকমতো না চলে এবং টনসিল ও এডিনয়েডে ঘনঘন সংক্রমণ হলে সাইনুসাইটিস হতে পারে।
সাইনুসাইটিসের ধরণ –
– মাথায় তীব্র ব্যথা হওয়া।
-নাকে ও নাকের আশপাশে গাল, চোখ, কপাল, চোয়ালে ব্যথা।
-নাক দিয়ে ঘনঘন পানি পড়া, নাক বন্ধ ও শ্বাস নিতে অসুবিধা হওয়া।Healthx BD
– ঘ্রাণশক্তি কমে যায়। খাবারের স্বাদ নষ্ট হয়ে যেতে পারে, ক্ষুধামন্দা দেখা দেয়।
-শরীরে জ্বর জ্বর ভাব, ক্লান্তি ও অবসাদ।
সাইনুসাইটিস প্রতিরোধ –
সাইনুসাইটিস প্রতিরোধে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাপাশি যাদের অ্যালার্জি ও ঠান্ডাজনিত সমস্যা আছে তাদের অনেক বেশি সর্তক থাকতে হবে।
-ধুলাবালি থেকে দূরে থাকতে হবে ও ইরে গেলে সবসময় মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
-ঘরে কার্পেট ব্যবহার করলে ডাস্ট জমে অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন ঘটাতে পারে। তাই কার্পেট ঘনঘন পরিষ্কার রাখতে হবে যাতে ময়লা না জমে।
-ঘরের আসবাবপত্র ও বিছানা পরিষ্কারের সময় মাস্ক ব্যবহার করতে হবে।
– নোংরা, স্যাঁতস্যাঁতে, অস্বাস্থ্যকর ও ঠান্ডা পরিবেশ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করতে হবে।
-ঋতু পরিবর্তনের সময় সাইনুসাইটিসের সংক্রমণ বেশি হয়। সে সময় সাবধানে থাকতে হবে।
অ্যালার্জি ও ঠান্ডা জাতীয় খাবার পরিহার করতে হবে এবং ধূমপান ত্যাগ করতে হবে।
– অ্যারোসোল, মশার কয়েলসহ যেকোনো ধরণের স্প্রে থেকে দূরে থাকতে হবে।
– রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পুষ্টিকর ও ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে, নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে।Healthx BD
আরও জানুন-
-মেয়েদের হরমোন সমস্যা নিয়ে কিছু কথা