ঔষধ বা শল্য চিকিৎসা ছাড়াও মনোচিকিৎসা (psychotherapy), কৃত্রিম অঙ্গ সংস্থাপন, আণবিক রশ্মির প্রয়োগ, বিভিন্ন বাহ্যিক উপায় (যেমন, স্প্লিণ্ট (Splint) এবং ট্রাকশন),জৈবিক সামগ্রি (রক্ত, অণু জীব ইত্যাদি), শক্তির অন্যান্য উৎস (বিদ্যুৎ, চুম্বক, অতি-শব্দ ইত্যাদি) ইত্যাদিরও প্রয়োগ করা হয়।
- চিকিৎসা বিজ্ঞান বা চিকিৎসা শাস্ত্র হল রোগ উপশমের বিজ্ঞান কলা বা শৈলী। মানব শরীর এবং মানব স্বাস্থ্য ভালো রাখার উদ্দেশ্যে রোগ নিরাময় ও রোগ প্রতিষেধক বিষয়ে চিকিৎসা বিজ্ঞানে অধ্যায়ন করা হয় এবং প্রয়োজন অনুসারে বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
বাংলাদেশে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রযুক্তির প্রথম সংবাদ উপস্থাপিকা অপরাজিতাকে উপস্থাপন করে চ্যানেল টোয়েন্টিফোর। এর আগে ভারতের উড়িষ্যার একটি প্রাইভেট টিভি চ্যানেল এআই এঙ্কর লিসাকে উপস্থাপন করে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স হলো এমন একটি প্রযুক্তি, যা তথ্য বিশ্লেষণের মাধ্যমে যন্ত্র বা অ্যাপ্লিকেশনকে মানুষের বুদ্ধি ও চিন্তাশক্তির আদলে কাজের উপযোগী করে তোলে। উচ্চতর ক্ষমতাস¤পন্ন ক¤িপউটার, রোবট ও অন্যান্য যন্ত্র এর অন্তর্ভুক্ত। আন্দ্রেয়ার কাপলান এবং মাইকেল হেনলিন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সংজ্ঞায় বলেন, এটি একটি সিস্টেমের বহির্ভূত তথ্য সঠিকভাবে ব্যাখ্যা করতে পারার ক্ষমতা, এমন তথ্য থেকে শিক্ষা গ্রহণ এবং ওই শিক্ষা ব্যবহার করে অভিযোজনের মাধ্যমে বিশেষ লক্ষ্য ঠিক করা।
জটিল রোগের ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট লক্ষণ চিহ্নিত করতে চিকিৎসাবিদ্যায় হাইটেক প্রযুক্তির ব্যবহার বেড়ে চলেছে৷ যেমন ম্যাগনেটিক রেজোনেন্স ইমেজিং পদ্ধতির মাধ্যমে শরীরের অভ্যন্তরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের বিস্তারিত চিত্র ফুটিয়ে তোলা হচ্ছে৷
সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ প্রযুক্তির উন্নয়ন হচ্ছে। মূলত আগের তথ্য বিশ্লেষণ করেই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিভিন্ন সেবা দিয়ে থাকে। অ্যালান টুরিং ১৯৫০ সালে তার উদ্ভাবিত ‘টুরিং টেস্ট’-এর মাধ্যমে কোনো যন্ত্রের চিন্তা করার ক্ষমতা আছে কিনা তা পরীক্ষা করা হয়। জন ম্যাকার্থি সর্বপ্রথম ১৯৫৫ সালে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স টার্মটি ব্যবহার করেন। পরের বছর নিউ হ্যামশায়ারের হ্যানোভার শহরের ডার্টমাউথ কলেজে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে তিনি তা প্রথম প্রকাশ করেন। এ জন্য জন ম্যাকার্থিকে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অন্যতম জনক বলা হয়। তার অন্য সহযোগীরা হলেন মার্ভিন মিনস্কি, অ্যালেন নিউয়েল এবং হার্বাট এ সায়মন।
মিউনিখের এক সফটওয়্যার কোম্পানি তাই এমন এক আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স সৃষ্টি করেছে, যার মাধ্যমে এমন রোগীর বাঁচার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে৷ বিশেষ সফটওয়্যারের মাধ্যমে ফুসফুসের ডিজিটাল মডেল তৈরি করে তাতে বাতাসের প্রবেশের হার নকল করা যায়৷ এভাবে সহনীয় চাপ নির্ণয় করে ভেন্টিলেটরের মাত্রা স্থির করা যায়৷ এবেনবিল্ড কোম্পানির সহ প্রতিষ্ঠাতা ড. ইয়োনাস বিলার বলেন, ‘‘এখনো পর্যন্ত ডাক্তার ফুসফুসের ভেতরে উঁকি মারতে পারেন না৷ তিনি শুধু দেখতে পান, ভেন্টিলেটর উইন্ডপাইপের উপর কতটা চাপ সৃষ্টি করছে৷ আমাদের প্রযুক্তির সাহায্যে তিনি প্রথম বার ফুসফুসের মধ্যে উঁকি মেরে দেখতে পারবেন, বাতাস প্রবেশ করে ঠিক কোথায় চাপ সৃষ্টি করছে৷ শুধু তাই নয়, ডিজিটাল টুলের মাধ্যমে তিনি রোগীর কোনো ক্ষতি না করে চিকিৎসার আগেই তাঁর ফুসফুসের উপর ভারচুয়াল পদ্ধতিতে নানা রকম পরীক্ষা করতে পারেন৷’’
স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির গবেষকরা দাবি করেছেন, তারা এমন একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরি করেছেন, যেটি সহজেই শরীরের বিভিন্ন পরীক্ষা করে কবে মানুষের মৃত্যু হবে, সেটা গণনা করে বলে দেবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা তৈরিতে যেসব সরঞ্জাম প্রয়োজন হবে এবং ব্যবহারের পর অকেজো হয়ে পড়া এসব যন্ত্র বা যন্ত্রাংশ যখন বর্জ্যে পরিণত হবে, তখন তা পরিবেশের জন্য ক্ষতির কারণ হবে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা গবেষণায় অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী প্রতিষ্ঠান গুগলের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহারে বিপর্যয়ের আশঙ্কার কথা বলেছেন। মার্কিন সংবাদ মাধ্যম দ্য ওয়াশিংটন পোস্টকে প্রদত্ত এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর উচিত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অপব্যবহার রুখতে নির্দিষ্ট নীতিমালা মেনে চলা। আর কীভাবে প্রযুক্তির অপব্যবহার হতে পারে, তা নিয়ে আগেই ভাবা উচিত। শুধু নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও উন্নয়ন করলেই চলবে না, সে প্রযুক্তির ব্যবহার যেন মানবসভ্যতার বিপক্ষে না যায়, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে।
স্বাস্থ্যসেবা পেশাদাররা এখন দ্রুত সংক্রমণ এবং ক্ষত সনাক্ত করতে এবং চিকিত্সা করতে প্রযুক্তি ব্যবহার করতে পারেন৷ যদিও এক্স-রে, এমআরআই এবং 3ডি প্রিন্টিং প্রযুক্তি ছিন্ন হাড় এবং অন্যান্য আঘাতের নির্ণয় এবং বুঝতে সাহায্য করতে পারে, উদাহরণস্বরূপ, হার্ট রেট মনিটরগুলি কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়াস সনাক্ত করতে সাহায্য করতে পারে।