প্রত্যেকেই একটি উজ্জ্বল, সাদা হাসি চায় এবং আপনার দাঁত সাদা করার জন্য কয়েকটি ভিন্ন উপায় রয়েছে। কিন্তু এমনও হতে পারে যে আপনার প্রতিদিনের অভ্যাস আপনার দাঁতে দাগ কাটছে যা আপনার ধারণার চেয়ে বেশি। এমন কিছু সুস্পষ্ট জিনিস রয়েছে যা আপনার দাঁতকে বাদামী বা হলুদ করে তুলতে পারে, আবার এমন কিছু অভ্যাস আছে যা আপনি বুঝতে পারেননা যে আপনার মুক্তার মত সাদা দাঁতকে নিস্তেজ করে দিচ্ছে। তেমন কিছু অভ্যাস হলঃ
- ধূমপানঃ ধূমপান ত্যাগ করা, বা কখনই শুরু না করা, আপনার মুখের সুস্থ্যতার জন্য যা করতে পারেন তার মধ্যে একটি সেরা জিনিস। ধূমপান শুধুমাত্র মুখের ক্যান্সার এবং পেরিয়ডোনটাইটিস (মাড়ির রোগ) হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায় না, তবে এটি আপনার দাঁতের পৃষ্ঠে একটি বাদামী দাগও জমা করে। এর মধ্যে কিছু দাঁতের চিকিৎসক দ্বারা পরিষ্কার করা যেতে পারে, তবে আপনার দাঁতের খাঁজ, গর্ত এবং ফাটলের গভীরে কিছু দাগ থাকতে পারে যা অপসারণ করা কঠিন। ধূমপানের মতো ভ্যাপিং আপনার দাঁতে দাগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই, তবে দুর্ভাগ্যবশত নিকোটিনের অন্যান্য সমস্ত নেতিবাচক প্রভাব এখনও প্রযোজ্য।
- তামাক ও সুপারি চিবিয়ে খাওয়াঃ তামাক চিবানো আপনার দাঁতকে ধূমপানের চেয়েও বেশি বাদামী দাগ দেয়, বিশেষ করে যখন এটি আপনার মুখের মধ্যে দীর্ঘ সময় ধরে রাখা হয়। আপনার মুখের নরম টিস্যুতে তামাকের সংস্পর্ষ ধূমপানের চেয়েও বড় ক্যান্সারের ঝুঁকি। সুপারি চিবানো তামাক চিবানোর মতোই মুখের উপর একই রকম প্রভাব ফেলে এবং এটি দক্ষিণ পূর্ব এশিয়া এবং এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে বেশি জনপ্রিয়। সুপারি দাঁত ও মাড়িতে গভীর লাল/বাদামী দাগ তৈরি করে।
- চা এবং কফিঃ সম্ভবত সবচেয়ে সামাজিকভাবে গ্রহণযোগ্য মাদকের ব্যবহার হল ক্যাফেইন, আর চা এবং কফি উভয়ই আপনার দাঁতে দাগ জমা করতে পারে। তামাক এবং সুপারি থেকে ভিন্ন, চা এবং কফি পরিমিত পরিমাণে খাওয়া অনেক বেশি নিরাপদ। আপনি দুধের সাথে পান করে চা এবং কফি থেকে দাগ কমাতে পারেন এবং আপনার সকালের কাপের পরপরই পানি দিয়ে কুলি করে ফেলতে পারেন। একটি স্ট্র দিয়ে পান করা আপনার সামনের দাঁত থেকে দাগকে দূরে রাখতে পারে, তবে সতর্ক থাকুন যে এইভাবে নিজের মুখ যেন পুড়ে না যায়।
- খারাপ ওরাল স্বাস্থ্যবিধিঃ প্রতিদিন ব্রাশ করা এবং ফ্লস করা সারাদিনের প্লেক এবং দাগ দূর করতে সাহায্য করে। যদি প্লেক অপসারণ না করা হয় তবে এটি দাঁতের গোঁড়ায় শক্ত হয়ে যায়, যা অত্যন্ত রুক্ষ এবং পরিষ্কার এনামেলের চেয়ে অনেক দ্রুত অন্যান্য উৎস থেকে দাগ টানতে পারে। বিবর্ণ দাঁত এড়াতে সহজ উপায় হল, দাঁত পরিষ্কার রাখুন।
- অ্যাসিড ক্ষয়ঃ খাবার/পানীয় থেকে বা অ্যাসিড রিফ্লাক্স/বমি থেকে আপনার দাঁতের সাথে যোগাযোগ করে এমন অ্যাসিড সময়ের সাথে সাথে এনামেল দূর করতে পারে। ক্ষয়প্রাপ্ত এনামেল পাতলা থেকে পাতলা হতে থাকে, তাই নীচের প্রাকৃতিকভাবে হলুদ ডেন্টিন স্তর দেখাতে শুরু করে। অপ্রয়োজনীয় অ্যাসিড এক্সপোজার এড়ানোর অর্থ আপনার দাঁত ক্ষয়প্রাপ্ত দাঁতের চেয়ে সাদা দেখাবে।
- ব্রুক্সিজম: দীর্ঘমেয়াদী ব্রুক্সিজম আপনার দাঁতের রঙকে প্রভাবিত করতে পারে। অনেকেরই বিশেষ করে ঘুমের সময় দাঁত চেপে বা পিষে ফেলার অভ্যাস আছে। এই অভ্যাসটিকে ব্রুক্সিজম বলা হয় এবং এটি দাঁতের এনামেলে ছোট চুলের ন্যায় ফাটল সৃষ্টি করতে পারে। এই ফাটলগুলি একটি অক্ষত এনামেল পৃষ্ঠের চেয়ে বেশি দাগ সংগ্রহের প্রবণ হবে।
- ক্লোরহেক্সিডিনঃ এটি কিছু মাউথওয়াশে পাওয়া অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এজেন্ট। ক্লোরহেক্সিডিন আপনার মুখের অবাঞ্ছিত জীবাণুগুলিকে মেরে ফেলার জন্য দুর্দান্ত, তবে শুধুমাত্র অল্প সময়ের জন্য ব্যবহার করা উচিত। এটি সহায়ক হতে পারে যদি আপনার ডেন্টিস্ট দ্বারা একটি সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য সুপারিশ করা হয়, তবে সম্ভবত প্রতিদিনের ব্যবহারের ভিত্তিতে এটি প্রয়োজনীয় নয়। ক্লোরহেক্সিডিনের নিয়মিত, দীর্ঘায়িত ব্যবহার আপনার দাঁতে একটি বাদামী অবশিষ্টাংশ ছেড়ে যেতে পারে। এটি আপনার দাঁতের চিকিৎসক দ্বারা একটি স্কেলিং এবং পরিষ্কার করার মাধ্যমে অপসারণ করা যেতে পারে, তাই যদি আপনার দাঁতের ডাক্তার আপনার নির্দিষ্ট প্রয়োজনের জন্য ক্লোরহেক্সিডিন যুক্ত পণ্য ব্যবহার করার পরামর্শ দেন তবে দুশ্চিন্তার কিছু নেই।
উপরোক্ত বিষয়গুলি মেনে চললে দাতের দাগ নিয়ে সচেতন থাকা সম্ভব। প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া অবশ্যই জরুরী।