প্রকৃতিতে ধীরে ধীরে কমছে তাপমাত্রা। বইছে হিমেল হাওয়া। এ পরিস্থিতিতে সক্রিয় হয়ে উঠছে একাধিক রোগজীবাণু। এই সব ভাইরাস, ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণে অনেকেই জ্বর, সর্দি, কাশির মতো সমস্যায় পড়ছেন। এসব সমস্যা এড়াতে ইতোমধ্যে অনেকেই ঠান্ডা পানি ছেড়ে গরম পানিতে গোসল করছেন। আসলে পানীয় বলুন কিংবা গোসল, ঠান্ডা পানির বিকল্প নেই। এটি শুধু সাময়িক আরামই দেয় না, শরীরের জন্যও কিন্তু উপকারী।
ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে ত্বক থেকে হজমক্ষমতা সবকিছুই ঠিক থাকে। আপনি যদি অতিরিক্ত গরম পানিতে গোসল করেন তবে ত্বক রুক্ষ হয়ে যাবে, চুল হবে শুষ্ক আর পেটে দেখা দেবে গোলমাল। গরমের এই সময়ে ঠান্ডা পানিতে গোসল করা গুরুত্বপূর্ণ। এটি শরীরের পাশাপাশি যত্ন নেয় মনেরও। জেনে নিন কেন ঠান্ডা পানিতে গোসল করা উপকারী-
সারাদিনের শক্তি
সারাদিন সতেজ ও ফুরফুরে থাকার জন্য ঠান্ডা পানিতে গোসল করা খুব জরুরি। কারণ এতে শরীরের শরীরের প্রদাহ ঠিক থাকে, যে কারণে টানা কাজ করেও আমাদের ক্লান্তি কম আসে। তাই দিনের শুরুতে ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল আপনি করতেই পারেন।
দ্রুত সুস্থ হতে চাইলে
যারা প্রায় সময়েই নানা ধরনের অসুস্থতায় ভুগে থাকেন তাদের জন্য উপকারী অভ্যাস হতে পারে ঠান্ডা পানিতে গোসল করা। কারণ এই অভ্যাস দ্রুত সুস্থ হতে সাহায্য করবে। নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ভালো থাকে।
ওজন কমাতে চাইলে
বাড়তি ওজন নিয়ে চিন্তিত হলে ঠান্ডা পানিতে গোসল করার অভ্যাস করুন। আপনি যদি নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে গোসল করেন তবে সহজেই মেদ কমে যাবে। আবার যাদের শরীরে স্ট্রেচ মার্ক রয়েছে তাদের জন্যও এটি হতে পারে একটি উপকারী অভ্যাস।
সক্রিয়তা বাড়াতে
মাথায় ঠান্ডা পানি ঢাললে তা আপনার সক্রিয়তা বাড়াতে কাজ করে। যেকোনো কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা সহজ হয়। এতে মন ও চেতনা কাজ করে একসঙ্গে। ঠান্ডা পানি আপনাকে নানাভাবে উপকৃত করবে।
সহ্যক্ষমতা বাড়ে
নিয়মিত ঠান্ডা পানিতে গোসল করলে বাড়ে সহ্যক্ষমতা। এটি ব্যথা-বেদনা সহ্য করার শক্তিও বাড়ায়। সেইসঙ্গে পেশী এবং গাটের সংযোগস্থলে রক্ত সঞ্চালন ঠিক রাখে। গরমের সময়ে গরম পানিতে গোসল করা মোটেও ভালো অভ্যাস নয়। কারণ এতে শরীর গরম হয়ে ও কষে যায়।
সুস্থ রাখে চুল
গরম পানিতে গোসল করলে চুলে থাকা প্রাকৃতিক তেল অনেকটাই দূর করে ফেলে। ফলে চুল হয়ে পড়ে রুক্ষ, শুষ্ক। ঠান্ডা পানি চুলের স্বাভাবিক তৈলাক্ততা বজায় রাখতে সাহায্য করে। ফলে মাথার কিউটিকল যেমন সুস্থ থাকে, তেমনই উজ্জ্বল ও স্বাভাবিক চুলের দেখা পাওয়া যায় শীতেও।
খুশকি কমায়
ঠান্ডা পানিতে নিয়মিত গোসল করলে মাথায় খুশকির পরিমাণও কমে আসে। সোরিয়াসিস বা একজিমার মতো রোগের উপশম কমাতে ঠান্ডা পানি বেশি উপকারী। ঠান্ডা পানি মাথা ঠান্ডা রাখতে ও চুলকানি কমিয়ে আনতে সহায়তা করে।
সারা বছর কি গরম পানিতে গোসল করা উচিত?
অনেকেই সারা বছর গরম পানি দিয়ে গোসল করেন। এ ব্যাপারে ডা. পাল বলেন, এতে সমস্যার কিছুই নেই। বরং আর্থ্রাইটিস, সিওপিডি এবং অ্যাজমার মতো সমস্যা থাকলে উষ্ণ পানিতে গোসল করলেই সুস্থ থাকবেন। তবে গ্রীষ্মকালে এমনিতেই আবহাওয়া গরম থাকে। তখন আলাদা করে আর পানি গরম করে গোসল না করলেই চলে।
অনেকেই শীতের দিনে প্রতিদিন গোসল করেন না। এ ব্যাপারে ডা.পাল জানান,এতে ত্বকের ইনফেকশন হতে পারে। এমনকী তাদের পেট গরম হওয়ার আশঙ্কাও থাকে। তাই তাপমাত্রা যতই কম হোক না কেন, প্রতিদিন গোসল করতেই হবে।