এমপক্স একটি ভাইরাসজনিত রোগ যা সাধারণত পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার ক্রান্তীয় রেনফরেস্ট সংলগ্ন এলাকায় বেশি দেখা যায়।তবে বর্তমানে আফ্রিকার শহরাঞ্চলের বিভিন্ন স্থানেও এটির সংক্রমণ বাড়ছে।এছাড়াও এটি এখন বিশ্বব্যাপী আতঙ্কের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
এমপক্স একটি সংক্রামক ব্যাধি যা পশু থেকে মানুষের দেহে সংক্রমিত হতে পারে। এটির উপসর্গ অনেকটা গুটিবসন্তের মত।তবে এক্ষেত্রে গুটিবসন্তের থেকে এটির তীব্রতা অনেক কম। গবেষণাগারের তথ্যানুসারে বাঁদরের শরীরে প্রথম এই ভাইরাসটির সন্ধান মেলে। বাঁদর ছাড়াও আফ্রিকান কাঠবেড়ালি এবং গাম্বিয়ান পাউচড ইঁদুরের মধ্যেও এই ভাইরাসটির সন্ধান মিলেছে। এই সব প্রাণীর মাংস খাওয়া মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণের একটি বড় কারণ হতে পারে।
এমপক্সের লক্ষণ-
সংক্রমণের এক থেকে দুই সপ্তাহের ভিতরেই এটির লক্ষণ প্রকাশ পেয়ে থাকে। এটির প্রধান লক্ষণ হলো র্যাশ। ২-৪ সপ্তাহ র্যাশের পাশাপাশি নিচের লক্ষণগুলোও থাকতে পারে—
– জ্বর,গলাব্যথা ও মাথাব্যথা ।
– মাংসপেশিতে ব্যথা ও দূর্বলতা।
– লিম্ফনোড বা লসিকাগ্রন্থি ফুলে যাওয়া।
– তবে অনেকের অসুস্থতা প্রথমে র্যাশ দিয়ে শুরু হয়। অনেকের এমন নাও হতে পারে।
-র্যাশে ব্যথা বা চুলকানিও হতে পারে এবং র্যাশ একসময় শুকিয়ে ঝরে পড়ে।
-সাধারণত হাতের তালু, পায়ের পাতা, মুখ,গলা, কুচকি, যৌনাঙ্গ ও পায়ুতে র্যাশ বেশি হতে পারে।
– এছাড়াও পায়ুপথে ব্যথা বা রক্তপাতও হতে পারে।
রোগ সংক্রমিত হওয়ার মাধ্যম-
-সাধারণত ত্বকে কাটা ছেঁড়া থাকলে, মিউকোসাল সারফেস যেমন মুখ, গলা, চোখ, যৌনাঙ্গের মাধ্যমে এমনকি শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমেও এ রোগ হতে পারে।
-ত্বকের মধ্যে লেসন থাকলে সরাসরি সংস্পর্শের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়।
-সাধারণত স্পর্শ, শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করলে এই রোগ ছড়ায়।
– ফেস টু ফেস কথা বললে, শ্বাস নিলেও ছড়াতে পারে।
-আক্রান্ত প্রাণীর কামড়, স্ক্র্যাচ, শিকার করা, চামড়া ছড়ানো, রান্না করা থেকেও আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
-আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত দ্রব্য যেমন কাপড়, চাদর, সুঁই ব্যবহার করলেও সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে।
-আক্রান্ত গর্ভবতী মা থেকে সন্তানেও এ রোগ ছড়াতে পারে।
সংক্রমিত হলে কি করা উচিত –
-সকল ক্ষত বা স্ক্যাব ঝড়ে পড়ে নতুন চামড়া উঠা পর্যন্ত ঘরে থাকুন।
– সাধারণত দুই থেকে চার সপ্তাহের মধ্যে উপসর্গগুলি নিজে থেকেই সেরে যায়।
– আক্রান্ত অনেকেরই চিকিৎসার দরকার হয় না, এবং তাঁরা নিজে থেকেই সেরে ওঠেন। রোগটি ধরা পড়লে চিকিৎসকরা রোগীর পরিস্থিতির দিকে লক্ষ রাখেন, রোগীর শরীরে যাতে জনশূন্যতা দেখা না দেয়, তা নিশ্চিত করার চেষ্টা করেন, রোগের উপসর্গগুলিকে কমাতে চেষ্টা করেন, এবং দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ হলে তা আটকাতে অ্যান্টিবায়োটিক দেন।বাইরে বের হলে ক্ষত ঢেকে রাখুন এবং মাস্ক পরুন।
এমপক্স হলে প্রতিরোধ-
– সাবান, হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে বারবার হাত ধুয়ে নিন।
-আপনার সঙ্গীর সাথে তার স্বাস্থ্য সম্পর্কে আলোচনা করুন, যেকোনো কারো সংক্রমণের লক্ষণ দেখা গেলে শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকুন।
-অন্য কারো ব্যবহৃত সামগ্রী ব্যবহার এড়িয়ে চলুন।
-আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে অন্তত ১ মিটার দূরত্ব রেখে চলুন।
-আক্রান্ত পশুপাখি এড়িয়ে চলুন।
-যেসকল এলাকায় এই রোগ ছড়িয়েছে সেই এলাকায় ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন।
এমপক্সের চিকিৎসা-
সাধারণত ভাইরাল অসুখগুলোর ওষুধ থাকেনা। যে যে লক্ষন থাকে সেগুলোর চিকিৎসা নিতে হয়। যেমন র্যাশ হলে সেটির যত্ন নিন, ব্যথা হলে সেটির জন্য ওষুধ খান।
তবে এই মুহূর্তে মাঙ্কিপক্সের তেমন কোনো চিকিৎসা নেই কিন্তু অ্যান্টিভাইরাল ওষুধে কাজ হতে পারে।তবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম তাদের ক্ষেত্রে টেকোভিরিম্যাট (TPOXX) এর মতো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।Healthx BD
–অস্ত্রোপচার ছাড়া হতে পারে পাইলসের চিকিৎসা