যক্ষ্মা একটি জীবাণুবাহিত রোগ যা শরীরের বিভিন্ন অংশে হতে পারে, যেমন ফুসফুস এবং ফুসফুসের পর্দা, অন্ত্র, কিডনি, অস্থিসন্ধি এবং লিম্প্ফনোডে। বিশেষ করে মেরুদণ্ডের হাড়ে যক্ষ্মা হলে সেটিকে পটস ডিজিজ বলা হয়। যক্ষ্মার জীবাণু সাধারণত ফুসফুস বা অন্য কোনো স্থান থেকে রক্তের মাধ্যমে মেরুদণ্ড বা হাড়ে পৌঁছে যায় এবং হাড়ের ভেতর প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে, যা অস্টিওমায়েলাইটিস নামে পরিচিত।
লক্ষণ
হাড় বা মেরুদণ্ডে যক্ষ্মা হলে ওই স্থানে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা, জ্বর, অরুচি এবং ওজন কমার মতো উপসর্গ দেখা দেয়। ব্যথার কারণে রোগী পিঠ সোজা করে হাঁটতে বাধ্য হয়। মাঝে মাঝে হাত দিয়ে চাপ দিলে মেরুদণ্ডে সামান্য ফোলা অংশ অনুভব করা যায়। হাড় থেকে সৃষ্ট চাপ মেরুদণ্ডের স্নায়ুতে চাপ দিতে পারে, যার ফলে প্যারালাইসিসও হতে পারে। প্রাথমিক অবস্থায় এটি এক্স-রেতে ধরা নাও পড়তে পারে, তাই চিকিৎসক বিভিন্ন রক্ত পরীক্ষা ও টিবি-সম্পর্কিত পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেন। সাধারণত এমআরআই পরীক্ষায় এই রোগ শনাক্ত হয়।
যক্ষ্মা হলে কি হাড় ভেঙে যেতে পারে?
যক্ষ্মার জীবাণু যখন হাড়ের ভেতরে প্রবেশ করে, তখন এটি হাড়ের গঠন পরিবর্তন করতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে হাড়কে ক্ষয় করতে থাকে। এটি হাড়ের সাথে সাথে মেরুদণ্ডের ডিস্ককেও ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং ইনফেকশনজনিত পুঁজ তৈরি করে। সবশেষে, এটি পুরো হাড়ের ভেতর ক্ষয় ও চাপ সৃষ্টি করে, যা হাড় ভেঙে ফেলতে পারে।
হাড়ে যক্ষ্মা হলে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা এবং প্রয়োজনে শল্যচিকিৎসার প্রয়োজন হয়। যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা শুরু করা গেলে ভালো ফল পাওয়া যায়। স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা প্যারালাইসিস হলে চিকিৎসার সফলতা কমে যায়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, অপুষ্টি, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং ফুসফুস বা অন্য যক্ষ্মার সঠিক চিকিৎসা না করা এসব হাড়ের যক্ষ্মার কারণ। মেরুদণ্ড বা হাড়ে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা ও অন্যান্য উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত সঠিক কারণ অনুসন্ধান করা উচিত।Healthx BD
আরও জানুন-
–প্রায়ই হাত-পায়ে ব্যথা হচ্ছে, কীভাবে বুঝবেন বড় কোনো রোগের লক্ষণ