গরমের সময় অনেকের ত্বকে লাল ফুসকুড়ি দেখা দেয় সেগুলো হিট র্যাশ বা ঘামাচি নামে পরিচিত। ঘামাচি মূলত একধরণের চর্মরোগ এবং ত্বকের নিচের ঘামগ্রন্থিতে থাকা জীবাণুর কারণে মানবদেহে এই চর্মরোগের সূত্রপাত ঘটে।একারণে,ঘামাচি হলে প্রচণ্ড চুলকানি হয় এবং শরীর ঘামলে জ্বালা পোড়া অনুভূত হয়। সাধারণত সারা শরীরেই ঘামাচি হয়ে থাকে। তবে পিঠে, বুকে, কপাল, গলায় এবং ঘাড়ে বেশি দেখা যায়।তবে, শিশুদের সবচেয়ে বেশি ঘামাচি হয়।
ময়লা, ধুলোবালি বা কোন কারণে যখন ঘামগ্রন্থির মুখ বন্ধ হয়ে যায় তখন সেখান থেকে ঘাম নিঃসৃত হতে পারে না।ফলে, তখন সেখানে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ বা প্রদাহ বেড়ে যায়। তখন লাল লাল গোটা বা ফুসকুড়ির মত ঘামাচি দেখা দেয়।
সাধারণত চার ধরনের ঘামাচি বা হিট র্যাশের সংক্রমণ হয়ে থাকে।যেমন-
১)মিলিয়ারিয়া রুব্রা: ত্বকে লাল লাল গুটি হয় র্যাশের মতো।
২)মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টালিনা: এ ধরনের ঘামাচি পানি জাতীয়, পানির ফোস্কার মতো হয়। এটি শিশুদের বেশি হয়।
৩)মিলিয়ারিয়া পাস্তুলোসা: ঘামাচি ইনফেকশনের পর্যায়ে চলে যায়, পুঁজ সৃষ্টি হয় অর্থাৎ পুঁজযুক্ত ঘামাচি এটি।
৪)মিলিয়ারিয়া প্রোফান্ডা: ত্বকের গভীরে থেকে হয়, এটি খুব একটা হয় না।
প্রথম তিনটি ধরণের ঘামাচি আমাদের দেশে দেখা গেলেও মিলিয়ারিয়া রুব্রা ও মিলিয়ারিয়া ক্রিস্টালিনার সংক্রমণ সবথেকে বেশি হয়ে থাকে।
ঘামাচি বা হিট র্যাশ থেকে বাঁচতে করণীয়-
১) যাদের শরীরে ঘাম বেশি হয় তাদের যত দ্রুত সম্ভব ঘামে ভেজা পোশাক পরিবর্তন করতে হবে।
২) প্রতিদিন গোসল করতে হবে, সম্ভব হলে দিনে দুইবার গোসল করতে হবে। স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে গোসল করতে হবে। শরীর পরিষ্কার রাখার জন্য সাবান ব্যবহার করতে হবে, কম ক্ষারযুক্ত অথবা অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল সাবান ব্যবহার করতে পারেন।
৩)ঘামাচি নখ দিয়ে চুলকালে বা আঁচড়ালে ইনফেকশন হতে পারে।তাই ঘামাচি হলে নখ ব্যবহার করা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলে হবে এবং প্রয়োজনে ভেজা কাপড় দিয়ে ক্ষত জায়গাটি পরিষ্কার করতে হবে। এতে ইনফেকশন যথাসম্ভব কমে যায়।
৪)ঘামাচি রোধক বা ট্যালকম পাউডার ব্যবহার করা যেতে পারে ঘামাচি দূর করার জন্য। তবে পাউডার ব্যবহারের আগে শরীর ভালো করে মুছে নিতে হবে যাতে ঘাম না থাকে। একসঙ্গে অনেক বেশি পরিমাণ পাউডার ব্যবহার করা যাবে না।
৫) প্রচন্ড গরমে শিশুদের ডায়পার পরানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
৬) প্রচণ্ড রোদে যাতে শিশুরা বাইরে না যায়, রোদে খেলাধুলা না করে সেদিকে নজর রাখতে হবে।
৭)গরমে ঢিলেঢালা, পাতলা সুতির পোশাক পরিধান করতে হবে।
৮)যথাসম্ভব গরম এড়িয়ে চলতে হবে, বসবাস ও কাজের জায়গা যাতে খোলামেলা ও বাতাস চলাচল করতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
ঘামাচি বা হিট র্যাশ থেকে সংক্রমণ যদি বেশি হয় তাহলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।Healthx BD
আরও জানুন-
–মারাত্মক তাপপ্রবাহ: কীভাবে উচ্চ তাপমাত্রা শরীরকে প্রভাবিত করে