পিরিয়ড বা মাসিক নারীদের জীবনে একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। প্রত্যেক নারীর সাধারণত মাসে একবার পিরিয়ড হয়ে থাকে। তবে এক্ষেত্রে যদি ব্যত্যয় ঘটে, তবে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা হতে পারে। বিশেষ করে অনেক অবিবাহিত নারী রয়েছেন ।
যাদের মাসিক অনিয়মিত; তাদের মাতৃত্বের স্বাস্থ্যঝুঁকি রয়েছে। এ নারীরা অনেক সময় ইচ্ছে করলেও গর্ভধারণ করতে পারেন না। তাদের বন্ধ্যত্বের ঝুঁকি বেড়ে যায়।
অনিয়মিত পিরিয়ড বা মাসিক/ঋতুস্রাব নারীদের কাছে পরিচিত বিষয়। বিশেষ করে কিশোরীদের মধ্যে এ সমস্যা বেশি দেখা যায়। এ নিয়ে কিশোরীরা দুশ্চিন্তায় ভোগেন। নিয়মিত ঋতুচক্র প্রতি মাসে দুই থেকে সাত দিন স্থায়ী থাকে।
অনিয়মিত পিরিয়ড
প্রতি ২৮ দিন অন্তর ৪ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হয় এই ঋতুস্রাব। তবে অনেকের ক্ষেত্রেই এই নিয়ম ঠিক থাকে না। অনিয়মিত মাসিক (Abnormal Menstruation) একটি সাধারণ সমস্যা, যেখানে মাসিকের সময়কাল, স্থায়িত্ব এবং রক্তপাতের পরিমাণে তারতম্য দেখা যায়।
কারো মাসিক ২১ দিনের আগে আবার কারো ৩৫ দিনের পরেও হতে পারে। আবার এমনও হতে পারে যে পরপর তিন মাস মাসিক হয়নি। এই ধরনের পরিবর্তনগুলোই অনিয়মিত মাসিক হিসেবে পরিচিত।
অনিয়মিত পিরিয়ড বা মাসিক হওয়ার কারণ
অনিয়মিত ঋতুস্রাবের পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কিছু কারণ সাধারণ এবং ক্ষণস্থায়ী হতে পারে, আবার কিছু ক্ষেত্রে এটি গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণও হতে পারে।
স্বাস্থ্য বিষয়ক কারণ –
পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম (PCOS): এই হরমোনজনিত সমস্যায় ডিম্বাশয়ে ছোট ছোট সিস্ট তৈরি হয় এবং অ্যান্ড্রোজেন হরমোনের আধিক্য দেখা যায়। এর ফলে ডিম্বাণু নিঃসরণে সমস্যা হয় এবং মাসিক অনিয়মিত হয়ে পড়ে।
এন্ডোমেট্রিওসিস: যখন জরায়ুর ভেতরের টিস্যু (এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যু) জরায়ুর বাইরে বৃদ্ধি পায়, তখন তাকে এন্ডোমেট্রিওসিস বলে। এটি অস্বাভাবিক রক্তপাত, পেটে ব্যথা এবং মাসিকের সময় অতিরিক্ত কষ্টের কারণ হতে পারে।
পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ (PID): এটি একটি ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ যা মহিলা প্রজনন অঙ্গকে প্রভাবিত করে। সাধারণত, এটি untreated যৌন সংক্রমণ (STI) এর কারণে হয়ে থাকে। PID এর লক্ষণগুলোর মধ্যে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব, অনিয়মিত মাসিক এবং পেলভিক ব্যথা অন্যতম।
প্রাথমিক ডিম্বাশয় অপর্যাপ্ততা (POI): ৪০ বছর বয়সের কম বয়সী মহিলাদের ডিম্বাশয় যখন সঠিকভাবে কাজ করে না, তখন এই অবস্থা দেখা দেয়। এর ফলে মাসিক বন্ধ হয়ে যেতে পারে বা অনিয়মিত হতে পারে। কেমোথেরাপি, রেডিয়েশন বা অটোইমিউন রোগের কারণে এটি হতে পারে।
থাইরয়েড বা পিটুইটারি গ্রন্থির সমস্যা: থাইরয়েড (হাইপোথাইরয়েডিজম বা হাইপারথাইরয়েডিজম) এবং পিটুইটারি গ্রন্থির সমস্যা হরমোনের ভারসাম্যকে প্রভাবিত করে, যার ফলে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।
রক্তপাত জনিত রোগ: রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা থাকলে অতিরিক্ত রক্তপাত হতে পারে।
জরায়ু বা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার: কিছু ক্ষেত্রে এই ক্যান্সারগুলো মাসিকের ধরনে পরিবর্তন আনতে পারে।
জীবনযাত্রার কারণ –
মানসিক চাপ: অতিরিক্ত মানসিক চাপ হরমোনের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে এবং মাসিকের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
ওজনের পরিবর্তন: হঠাৎ করে অতিরিক্ত ওজন বাড়া বা কমলে মাসিকে সমস্যা হতে পারে।
অতিরিক্ত ব্যায়াম: যারা দীর্ঘ দূরত্বে দৌড়ান, নৃত্যশিল্পী বা জিমন্যাস্ট, তাদের শরীরে ফ্যাট কমে গেলে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।
ভাইরাস বা অন্যান্য অসুস্থতা: সাধারণ অসুস্থতাও মাসিকের চক্রে প্রভাব ফেলতে পারে।
অন্যান্য কারণ:
জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল: জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল গ্রহণ বা বন্ধ করার কারণে হরমোনের পরিবর্তন হতে পারে এবং মাসিক অনিয়মিত হতে পারে। পিল বন্ধ করার পর ৬ মাস পর্যন্ত অনিয়মিত মাসিক থাকতে পারে।
কিছু ওষুধ: স্টেরয়েড বা অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্টের মতো ওষুধ মাসিকের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।
গর্ভপাত বা একটোপিক গর্ভাবস্থা: গর্ভপাত বা জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণের কারণে রক্তপাত হতে পারে।
জরায়ু, ডিম্বাশয় বা ফ্যালোপিয়ান টিউবে অস্ত্রোপচার, দাগ বা বাধা: এই কারণেও মাসিক অনিয়মিত হতে পারে।
বয়ঃসন্ধি ও পেরিমেনোপজ: বয়ঃসন্ধির শুরুতে এবং মেনোপজের কাছাকাছি সময়ে (পেরিমেনোপজ) হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মাসিক অনিয়মিত হওয়া স্বাভাবিক।

অনিয়মিত পিরিয়ডের রোগ নির্ণয়
মাসিকের নিয়মিত না হওয়ার কারণ নির্ণয়ের জন্য ডাক্তার আপনার মাসিকের ইতিহাস এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত তথ্য জানতে চাইবেন। শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি পেলভিক পরীক্ষাও করা হতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলোও করা হতে পারে:
পেলভিক আলট্রাসাউন্ড: জরায়ু ফাইব্রয়েড, পলিপ বা ডিম্বাশয়ের সিস্টের কারণে অস্বাভাবিক রক্তপাত সনাক্ত করতে এটি সাহায্য করে।
এন্ডোমেট্রিয়াল বায়োপসি: জরায়ুর ভেতরের আস্তরণ থেকে টিস্যুর নমুনা নিয়ে পরীক্ষা করা হয়। এটি এন্ডোমেট্রিওসিস, হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বা ক্যান্সার পূর্ববর্তী কোষ সনাক্ত করতে সাহায্য করে।
হিস্টেরোস্কোপি: একটি সরু টেলিস্কোপের মতো যন্ত্র জরায়ুতে প্রবেশ করিয়ে ভেতরের অংশ পরীক্ষা করা হয়। অস্বাভাবিক রক্তপাতের কারণ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য এটি ব্যবহার করা হয়।
ওষুধ:
হরমোনাল জন্ম নিয়ন্ত্রণ: PCOS, জরায়ু ফাইব্রয়েড, এন্ডোমেট্রিওসিস বা অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার কারণে অনিয়মিত বা অতিরিক্ত রক্তপাত নিয়ন্ত্রণে এটি ব্যবহার করা হয়। এটি মাসিক চক্রকে নিয়মিত করতেও সাহায্য করে। বিভিন্ন ধরনের হরমোনাল পিল, ভ্যাজাইনাল রিং, ইনজেকশন বা আইইউডি (IUD) পাওয়া যায়।
ট্রানেক্সামিক অ্যাসিড: অতিরিক্ত রক্তপাত নিয়ন্ত্রণের জন্য এই ওষুধটি মাসিকের শুরুতে সেবন করতে হয়।
ব্যথানাশক: হালকা থেকে মাঝারি ব্যথা বা পেটে খিল ধরা কমাতে আইবুপ্রোফেন বা অ্যাসিটামিনোফেন এর মতো ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে।
হরমোন থেরাপি: পেরিমেনোপজের কারণে অনিয়মিত মাসিক হলে হরমোন থেরাপি সাহায্য করতে পারে।
অ্যান্টিবায়োটিক: সংক্রমণের কারণে অনিয়মিত রক্তপাত হলে অ্যান্টিবায়োটিক prescribed করা হয়।
গোনাডোট্রপিন- রিলিজিং হরমোন অ্যাগোনিস্ট: এই ওষুধগুলো জরায়ু ফাইব্রয়েডের আকার কমাতে এবং অতিরিক্ত রক্তপাত নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে, তবে এটি সাময়িকভাবে মাসিক বন্ধ করে দিতে পারে।
সার্জারি
কিছু ক্ষেত্রে সার্জারির প্রয়োজন হতে পারে:
এন্ডোমেট্রিয়াল অ্যাবলেশন: এই পদ্ধতিতে তাপ, ঠান্ডা বা অন্যান্য শক্তি ব্যবহার করে জরায়ুর ভেতরের আস্তরণ ধ্বংস করা হয়, যাতে রক্তপাত কমে যায়।
মায়োমেকটমি: জরায়ু ফাইব্রয়েড অপসারণের জন্য এই সার্জারি করা হয়।
ইউটেরিন আর্টারি এমবোলাইজেশন: জরায়ুতে রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে ফাইব্রয়েড সঙ্কুচিত করা হয়।
হিস্টেরেক্টমি: গুরুতর ক্ষেত্রে, জরায়ু অপসারণের প্রয়োজন হতে পারে।

অনিয়মিত মাসিক প্রতিরোধ
কিছু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস অনিয়মিত পিরিয়ডের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে:
১। পরিমিত ব্যায়াম এবং পুষ্টিকর খাবার গ্রহণের মাধ্যমে একটি স্বাস্থ্যকর জীবনধারা বজায় রাখুন।
২। ধীরে ধীরে ওজন কমান, কঠোর ডায়েট পরিহার করুন।
৩। পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করুন।
৪। মানসিক চাপ কমানোর কৌশল অনুশীলন করুন।
৫। অতিরিক্ত বা তীব্র ব্যায়াম পরিহার করুন।
৬। নির্দেশ অনুযায়ী জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল বা অন্যান্য গর্ভনিরোধক ব্যবহার করুন।
৭। টক্সিক শক সিনড্রোম এবং সংক্রমণ এড়াতে প্রতি চার থেকে ছয় ঘন্টা অন্তর ট্যাম্পন বা স্যানিটারি ন্যাপকিন পরিবর্তন করুন।
৮। নিয়মিত গাইনিকোলজিস্ট এবং প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারীর সাথে দেখা করুন।
কখন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন
যদি আপনার মাসিক বেদনাদায়ক বা অনিয়মিত হয় অথবা নিচের যেকোনো উপসর্গ দেখা যায়, তবে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
১। মাসিকের সময় বা দুই মাসিকের মাঝে তীব্র ব্যথা বা পেটে খিল ধরা।
২। অস্বাভাবিকভাবে ভারী রক্তপাত (ঘণ্টায় একটি স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ট্যাম্পন দুই থেকে তিন ঘণ্টা ধরে ভিজে যাওয়া) বা বড় আকারের রক্ত জমাট বাঁধা।
৩। দুর্গন্ধযুক্ত যোনি স্রাব।
৪ । সাত দিনের বেশি সময় ধরে মাসিক হওয়া।দুই মাসিকের মাঝে বা মেনোপজের পরে রক্তপাত বা স্পটিং।
৫। নিয়মিত মাসিক হওয়ার পরেও হঠাৎ করে অনিয়মিত হয়ে যাওয়া।
৬। মাসিকের সময় বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭। টক্সিক শক সিনড্রোমের লক্ষণ (যেমন জ্বর, বমি, ডায়রিয়া, অজ্ঞান বা মাথা ঘোরা)।
৮। আপনি যদি মনে করেন আপনি গর্ভবতী।
নারীস্বাস্থ্য সুরক্ষায় এবং জটিলতা এড়াতে পিরিয়ডকালীন সচেতনতা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা জরুরি।
• মাসিকের সময় স্যানিটারি প্যাড বা মেন্সট্রুয়াল কাপ ব্যবহার করুন। কাপড়, তুলা বা টিস্যু ব্যবহার করবেন না।
• চার থেকে ছয় ঘণ্টা পরপর স্যানিটারি প্যাড পরিবর্তন করুন। একসঙ্গে দুটি স্যানিটারি প্যাড পরবেন না।
• র্যাশ এড়াতে যথাসময়ে প্যাড পরিবর্তন করা এবং যোনিপথের আশপাশের জায়গা শুকনা রাখা জরুরি।
• ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন এড়াতে প্রতিদিন গোসল করুন। পরিষ্কার অন্তর্বাস ব্যবহার করুন।
• ব্যবহৃত কাপড় ও অন্তর্বাস পরিষ্কার করে ভালোভাবে রোদে শুকিয়ে নিন।
• যোনিপথের আশপাশে সুগন্ধী বা অ্যালকোহলযুক্ত পণ্য ব্যবহার করবেন না।
• এ সময় জরায়ুতে সংক্রমণ হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। তাই পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন থাকা জরুরি।
• ভারী কাজ, ব্যায়াম, সাঁতার বা সাইকেল চালানো থেকে বিরত থাকুন।
• হরমোনের প্রভাবে এ সময় মানসিক ও শারীরিক বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে। তাই মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করুন।
• এ সময় বাইরের খাবার এড়িয়ে পুষ্টিকর খাবার খান। প্রচুর পানি পান করুন।
• জটিলতা এড়াতে নিয়মিত জরায়ুমুখ ও স্তন ক্যানসার স্ক্রিনিং করা জরুরি।
ইউনিসেফ বাংলাদেশ ও ওয়াটারএইডের যৌথ উদ্যোগে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর সবশেষ জরিপ ‘ন্যাশনাল হাইজিন সার্ভে ২০১৮’–এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সচেতনতার অভাব ও দাম বেশি হওয়ায় দেশের ৪৩ শতাংশ কিশোরী ডিসপোজিবল প্যাড, ৫০ শতাংশ পুরোনো কাপড় এবং বাকিরা নতুন কাপড় ও তুলা ব্যবহার করে। প্রাপ্তবয়স্ক নারীদের মধ্যে ২৯ শতাংশ ডিসপোজিবল প্যাড ও ৬৮ শতাংশের বেশি পুরোনো কাপড় ব্যবহার করেন।
আপনি যদি দ্রুত এবং সহজে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার খুঁজতে চান বা নির্ভরযোগ্য ওষুধ বাসায় পেতে চান, তাহলে HealthX আপনার জন্য সেরা সমাধান!
🔹 বিশেষজ্ঞ ডাক্তার খুঁজুন ও অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিন: Find Doctors Here
🔹 বাসায় বসে প্রয়োজনীয় ওষুধ পান: Order Medicine Online
HealthX এর মাধ্যমে আপনি বিশ্বস্ত চিকিৎসক, হাসপাতাল ও ফার্মেসি সংযোগ পেতে পারেন, যাতে আপনার স্বাস্থ্য নিরাপদ থাকে এবং আপনি দ্রুত চিকিৎসা পেতে পারেন।
দ্রুত ও সহজ অনলাইন ডাক্তার অ্যাপয়েন্টমেন্ট
নির্ভরযোগ্য ওষুধ বাসায় ডেলিভারি
বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ এক ক্লিকে
নিজেকে ও পরিবারকে সুরক্ষিত রাখুন – HealthX এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা নিন!
আরও জানুন-